১লা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস
প্রতি বছরের মে মাসের প্রথম দিনটি অর্থাৎ ১লা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস যা পৃথিবীর প্রায় অনেক দেশীই এই দিনটি আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে পালন করে। অনেক দেশে ১লা মে দিনটিকে লেবার ডে হিসাবে পালন করে থাকে।
এই পোষ্টে আমরা জানবো ১লা মে আন্তজার্তিক শ্রমিক দিবস সম্পর্কে।
ভূমিকা
মে দিবসকে সাধারণত আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস বলা হয়ে থাকে। মূলত এই দিনটি হলো বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন। প্রতি বছর পয়লা মে তারিখে পুরো বিশ্বব্যাপী এই দিনটি উদযাপিত করে থাকে। বিশ্বের প্রায় ৮০টি দেশে ১লা মে সরকারিভাবে ছুটির দিন হিসেবে পালন করে থাকেন। তবে অন্যান্য দেশেও এটি বেসরকারিভাবে পালন হয়ে থাকে।
এই দিনে বিভিন্ন দেশে শ্রমজীবী মানুষ ও শ্রমিক সংগঠনসমূহ রাস্তায় সংগঠিত হয়ে মিছিল ও শোভাযাত্রার মধ্যে দিয়ে দিবসটি অতি মর্যাদার সাথে পালন করে। যুক্তরাষ্ট্র বা কানাডায় এইদিনটি পালন করা হয় না। মূলত শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিনই হল ১লা মে আন্তর্জাতিক দিবস।
মে দিবস কি এবং কেন
পুরো বিশ্বের আজ পালন হয়ে আসছে মহান মে দিবস। মে দিবস মূলত শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের দিন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে ১৮৮৬ সালে মার্কেটের ন্যায্য মজুরি এবং দৈনিক আট ঘন্টা কাজের দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর গুলি চালায় পুলিশ যার ফলে অনেক শ্রমিক আহত হয়। এরপর থেকেই এই দিনটি পালন হয়ে আসছে মে দিবস বা শ্রমিক দিবস হিসেবে। এই ঘটনার পর থেকে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালন হয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্রে।
বিভিন্ন দেশে শ্রমজীবী মানুষ ও শ্রমিকরা সংগঠিতভাবে রাজপথে মিছিল ও শোভাযাত্রার মধ্যে দিয়ে এই দিবসটি পালন করে থাকে। বিশ্বের প্রায় ৮০ টি দেশে এই দিনটি জাতীয় ছুটির দিন ঘোষনা করা হয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য দেশে এই দিনটি বেসরকারিভাবে পালন করে থাকে।
যুক্তরাষ্টের শিকাগো শহরে ১৮৮৪ সালে শ্রমিকরা দৈনিক ৮ ঘন্টা কাজ করার দাবীতে আন্দোলন শুরু করে। ১৮৮৬ সালের পহেলা মে পর্যন্ত সময় বেধেঁ দেন তাদের এ দাবি কার্যকর করার জন্য। কিন্তু মালিকপক্ষের কাছে বারবার দাবি জানানো হলেও কোনো সাড়া না পাওয়ার কারনে শ্রমিকদের প্রতিবাদ চরম শিখরে ওঠে যায়।
১৮৮৬ সালের ৪ মে ঘড়িতে তখন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা বাজে। চারদিকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে সেই সময় স্কয়ার নামে এক বানিজ্যিক এলাকায় শ্রমিকরা মিছিল করার জন্যে একসাথে মিলিত হয়। মিলিত হওয়া শ্রমিকদের উদ্দ্যেশে অগাস্ট স্পিজ নামে এক নেতা কিছু কথা বলছিলেন।
হঠাৎ দূরে দাড়োনো থাকা পুলিশ দলের কাছে এক বোমার বিস্ফোরণ ঘটে, যার ফলে ঘটনাস্থালে একজন পুলিশ ও পরবর্তীতে ছয়জন পুলিশ নিহত হন। পুলিশবাহিনী শ্রমিকদের ওপর হামলা শুরু করে যা ভয়াবহ খারাপ রূপ নেয়। এই হামলায় ১১ জন শ্রমিক শহীদ হয়। ১৮৮৯ সালের জুলাই ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক এক শ্রমিক সম্মেলনে ১ মে শ্রমিক দিবস হিবেবে ঘোষণা করা হয়।
পরে প্রতি বছরের ১ মে সারা বিশ্বব্যাপী মে দিবস বা আন্তার্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে পালন হয়ে আসছে।
মে দিবস কবে কোথায় প্রথম পালিত হয়
বিশ্বের প্রায় সবকয়টি দেশেই মে দিবস পালন করা হয়। বিবিন্ন সভা, মিছিল, অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে এই দিনটি পালিত হয়ে থাকে। মে মাসের প্রথম তারিখ অর্থাৎ পহেলা মে হচ্ছে ঐতিহাসিক মে দিবস। ১৮৮৬ সালে পহেলা মে তারিখে আমেরিকার মার্কেটে ৮ ঘন্টার কাজ এবং শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করার দাবিতে পথে নেমেছিলেন শ্রমিকরা।
সেই শ্রমিকদের ওপর পুলিশ গুলি চালিয়েছিল। যার ফলে চারজন শ্রমিক নিহত হয়েছিলেন। ঠিক তখন থেকেই এই দিনটি শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তারিখ হিসেবে পরিচিত লাভ করে। বিভিন্ন অনুষ্ঠান, মিছিল, সভার মধ্যে দিয়ে এই দিনটি পালন করা হয়। বিশ্বের প্রায় সব কয়টি দেশ এই দিনটি পালন করে।
১৯২৩ সালে ১ মে ভারতে প্রথম মে দিবস পালন করা হয়েছিল। তখনকার মাদ্রাজ যা এখন চেন্নাই এক সাথে মিলিত হয়েছিলেন শ্রমিকরা। হিন্দুস্তান লেবার কিষান পাটি ভারতে সর্বপ্রথম মে দিবসের আয়োজন করেছিল। বর্তমানে ভারতের প্রায় সবকয়টি কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন ও অন্যান্য সকল সংগঠন এই দিনটি মে দিবস হিবেবে পালন করে।
১৯৮৯ সালে ফরাসী বিপ্লবের শতবর্ষে প্যারিসে বসে শ্রমিকদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ‘সেকেন্ড ইন্টারন্যাশনালের’ মহাসম্মেলন। সমাজতন্ত্রী বিপ্লবী রেমন্ড লাভিনে প্রস্তাব দেন যে শ্রমিকদের অধিকার অর্জনের আন্দোলনকে শক্তিশালী করতে দেশে দেশে পালন করা হবে মে দিবস।
পরে ১৯০৪ সালে আমস্টারডামে সমাজতন্ত্রীদের এক সম্মেলনে সিদ্ধান্ত হয় যে,দৈনিক ৮ ঘন্টা কাজের দাবিতে ও শ্রমিকদের শান্তি প্রতিষ্ঠার দাবীতে প্রত্যেক দেশে দেশে এই দিনটি মে দিবস হিসেবে পালিত হবে। রাশিয়ায় বলশেভিক বিপ্লবের পর ১৯১৭ সালের পর থেকে অনেক সমারোহে মে দিবস পালন হতে থাকে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট ও কানাডায় মে দিবসটি পালিত হয় না।
তারা সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সোমবার এই দিবসটি পালন করে থাকে। মে দিবসে সরকারিভাবে ছুটি ঘোষণা করা থাকে।
মে দিবসের ইতিহাস
পহেলা মে দিবস হল আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস যা পৃথিবীর অনেক দেশেই এটি পালন করে থাকে। আবার বেশকিছু দেশে মে দিবসকে লেবার ডে হিসেবে পালিত হয়। পহেলা মে সাধারণত সরকারিভাবে ছুটির দিন ঘোষণা করা হয়েছে। আপনা আপনি এই দিনটি ধার্য করা হয়নি এর পিছনে ইতিহাস রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে শিকাগো শহরে ১৮৮৬ সালের ১লা মে এক মার্কেটে দৈনিক ৮ ঘন্টা শ্রম আদায়ের দাবীতে আন্দোলন করে। পুলিশ সেই আন্দোলনের ওপর গুলি চালায় যার ফলে ১১ জন শ্রমিক শহীদ হয়। যুক্তরাষ্ট্র বা কানাডায় ১মে দিনটি পালন করা হয় না। তারা সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সোমবার মে দিবসটি পালন করে থাকে।
এ ছাড়াও এই দিনে আরও কিছু আঞ্চলিক ভাবে কিছু ঘটনা রয়েছে যা পালিত হয়ে থাকে। একজন শ্রমিককে দৈনিক ১০ থেকে ১২ ঘন্টা কাজ করতে হতো এবং সপ্তাহে ৬ দিন। দীর্ঘক্ষণ কাজ করার পর মজুরী মিলত অতি নগণ্য যার ফলে খুবই মানবেতর জীবনযাপন করতে হতো, ক্ষেত্রবিশেষে তা দাসবৃত্তির পর্যায়ে পড়ত।
১৮৮৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে দৈনিক ৮ ঘন্টা কাজ করার দাবীতে একদল শ্রমিক আন্দোলন শুরু করেন এবং তাদের এই দাবী মেনে নেওয়ার জন্য সময় বেঁধে দেয় ১৮৮৬ সালের ১লা মে। কারখানার মালিকপক্ষ তাদের এই দাবী মানতে নারাজ। ১৮৮৬ সালের ৪ঠা মে সন্ধ্যাবেলা হালকা বৃষ্টির মধ্যে শিকাগোর হে-মার্কেট নামে এক বানিজ্যিক এলাকায় একদল শ্রমিকগণ তারা তাদের দাবী আদায়ের জন্য মিছিলের উদ্দেশ্যে এক সাথে হন।
মূলত ১৮৭২ সালে কানাডায় অনুষ্ঠিত এক বিশাল শ্রমিক শোভাযাত্রার সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে এটি করা হয়েছিল। এক নেতা নাম আগস্ট স্পীজ জড়ো হওয়া শ্রমিকদের উদ্ধেশ্যে কিছু কথা বলছিলেন। সেই জায়গাকে কেন্দ্র করে দূরে দাড়ানো পুলিশ দলের কাছে এক বোমার বিস্ফোরন হয় যার ফলে এক পুলিশ নিহত হয়।
তাৎক্ষনিক পুলিশবাহিনী শ্রমিকদের উপর বর্বর হামলা শুরু করে যা রায়টের রূপ নেয়। পুলিশের হামলার ফলে ১১ জন শ্রমিক শহিদ হন। আগস্ট স্পীজ সহ আটজনকে পুলিশ হত্যার মামলায় অভিযুক্ত করা হয়। তাদের বিচারের পর ১৮৮৭ সালের ১১ই নভেম্বর খোলা জায়াগায় ৬ জনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
ফাঁসির একদিন আগেই কারাগারের ভিতরে লইস লিং নামক একজন ব্যক্তি নিজেই নিজের জীবন দিয়ে দেয়, অন্য আরেকজনকে ১৫ বছরের কারাদন্ডে দন্ডিত হয়। ফাঁসির মঞ্চে নিয়ে আসার পূর্বে আগস্ট স্পীজ বলেছিলেন “আজ আমাদের এই নি:শব্দতা তোমাদের আওয়াজ অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী হবে”।
তবে ২৬শে জুন ১৮৯৩ সালে ইলিনয়ের গভর্ণর অভিযুক্ত আটজনকেই নির্দোষ বলে ঘোষণা করেন এবং রায়টের হুকুম প্রদানকারী পুলিশের কমান্ডারকে দুর্নীতির দায়ে দোষী প্রমান করা হয়। তবে আজ পর্যন্ত সেই অজ্ঞাত বোমা হামলাকারীর কোন প্রকার পরিচয় প্রকাশ পায়নি।
অবশেষে ‘দৈনিক ৮ ঘন্টা কাজ করার’ দাবী বা আন্দোলন অফিসিয়াল ভাবে স্বীকৃতি লাভ করে। পহেলা মে বা মে দিবস প্রতিষ্ঠা পায় শ্রমিকদের দাবী আদায়ের দিন হিসিবে। বর্তমানে যা পৃথিবীব্যাপী আজও পালন হয়ে আসছে।
মে দিবসের স্লোগান
শ্রমিকদের দৈনিক ৮ ঘন্টার কাজের দাবীতে যে আন্দোলনের আতœত্যাগের এই দিনকে তখন থেকেই সারা বিশে^ মে দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে। মে দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় বা স্লোগান হল “শ্রমিক-মালিক ঐক্য গড়ি, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি”।
মে দিবসের বক্তব্য
পুরো বিশ্ববাসী ১লা মে শ্রমিক দিবস হিসেবে পালন করে থাকে। শ্রমিক দিবস নিয়ে অনেক ধরনের বক্তব্য বা ভাষণের আয়োজন করা হয়ে থাকে। তেমনিই একটি মে দিবসের বক্তব্য আলোচনা করা হল।
সম্মানিত অতিথিবৃন্দ
সর্বপ্রথম সবাই আমার ভালোবাসা গ্রহন করবেন। আজকে ১লা মে দিবস উপলক্ষ্যে কিছু বলার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করছি।
১লা মে হচ্ছে মে দিবস বা আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস। এই দিবসটি এত সহজে অর্জন হয়নি। এর পিছনে এক রক্তাক্ত ইতিহাস জড়িত রয়েছে। শ্রমিকরা তারা তাদের প্রাপ্ত আদায়ের জন্য ১৮৮৬ সালে আমেরিকায় এক শহরের একদল শ্রমিক ধর্মঘটের আহবান করেছিল।
দৈনিক আট ঘন্টা কার্যসময় নির্ধারণ করার উদ্দেশ্যে প্রায় তিন হাজার শ্রমিক এক সাথে হয়ে এক বিশাল র্যালির আয়োজন করা হয়েছিল। মালিকশ্রেণির সাথে শ্রমিকশ্রেণির সংঘাত অনিবার্য হয়ে ওঠে। যার ফলে চারজন শ্রমিক নিহত হন। চার মে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা আন্দোলনের ডাক দেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হে মার্কেট স্কয়ারে পুনরায় গণ আন্দোলনের মাঝে পুলিশ আবারও গুলি চালায়।
এতে অনেক শ্রমিক নিহত হন। শেষ পর্যন্ত এই আন্দোলন বিশাল এক দাঙ্গায় পরিণত হয়। দাঙ্গায় জড়িত কয়েকজনকে আসামি করা হয়। আদালতে সরাসরি কোনো প্রকার প্রমাণ না পেলেও কয়েকজনকে মৃত্যুদন্ড দেয়। ১৮৮৭ সালের ১১ নভেম্বর আসামিদের ফাসিঁ কার্যকর করা হয় । যার ফলে পুরো বিশ্বে প্রতিবাদের ঝড় বয়ে যায়।
এরি ফল স্বারূপ ১৮৮৯ সালের জুলাই মাসে ফ্রান্সের প্যারিসে ইন্টারন্যাশন্যাল লেবার কংগ্রেসের আয়োজন করা হয় এবং এখান থেকেই প্রতি বছরে পহেলা মে-কে মে দিবস হিসাবে পালনে সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। যার ফলে শ্রমিকরা কার্যসময় কিছুটা কমাতে সমর্থ হয়। আন্দোলন ছাড়া কখনোই কোন অধিকার আদায় করা যায় না।
মে দিবস হলো বিশ্বের সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের এক হাতিয়ার। এখন আমাদের সবাইকে এক হয়ে শ্রমিকদের সঠিক সম্মান ও অধিকার আদায়ের জন্য এক সাথে কাজ করতে হবে। তবেই মে দিবস সার্থক ও সফল হবে।
এই আশাবাদ ব্যাক্ত করে আমি আমার বক্তব্য শেষ করলাম।
মে দিবস কারা পালন করে
মে দিবস বা আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস এর পিছনে অনেক রক্তক্ষয়ী ঘটনা রয়েছে। মূলত শ্রমিক দিবস পালন করে থাকে শ্রমিকরা। ১৯২৩ সালে ১ মে ভারতে সর্বপ্রথম মে দিবস পালন করা হয়েছিল। এই দিনে সকল সরকারি প্রতিষ্ঠান ছুটি থাকে।
মে দিবসে সকল শ্রমিক লেবার পর্যায়ের সকল মানুষ এক সাথে মিলিত হয়ে মিছিল, র্যালি ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। শ্রমিকদের দাবী আদায়ের দিন হিসেবে এই দিনটি তারাই পালন করে থাকে।
কেন পালন করা হয় মে দিবস
মে দিবস কেন পালন করা হয় জানতে হলে ১৮৮৬ সালের দিকে চলে যেতে হবে। মূলত ওই সালে ১লা মে তেই শুরু হয় শ্রমিক আন্দোলন। আমেরিকার শিকাগো শহরের হে মার্কেটের সামনে শ্রমিকরা একসাথে মিলিত হয়েছিল তারা তাদের অধিকার বুঝে নেওয়ার জন্য। সেই সময় দৈনিক ১২-১৪ ঘন্টা কাজ করানো হতো একজন শ্রমিককে দিয়ে।
যা আস্তে আস্তে শ্রমিকদের ভিতরে ক্ষোভ সৃষ্টি হতে থাকে। আর সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশই হল ১লা মে আন্দোলন। ১লা মে তারিখে পথে নামা শ্রমিকদের দাবী আদায়ের আন্দোলনের ওপর পুলিশ নির্মমভাবে গুলি চালায়। যার ফলে অনেক শ্রমিক নিহত হয় এবং আহত হয়েছিল অনেক শ্রমিক। কিন্তু শ্রমিকদের এই বলিদান বিফলে যায়নি।
১৮৮৯ সালে এক সমাজতান্ত্রিক সম্মেলনে শ্রমিকদের দাবী আদায়ের জন্য প্রস্তাব তুলা হয়। তাদের কাজের কার্যসীমা নির্দিষ্ট করে দেওয়ার জন্য। সেই প্রস্তাবে সকল আন্তর্জাতিক মহল সম্মত দেন। এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কার্ল মার্ক্স ও ফ্রেডরিক এঙ্গেলস।
সম্মেলনের পর থেকেই মূলত শ্রমিকদের কাজের সময়সীমা দৈনিক আট ঘন্টা নির্ধারণ করা দেয়া হয়। পাশাপাশি এই দিনটি শ্রমিকদের জন্য শ্রমিক দিবস ঘোষনা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এই দিনটি ছুটির জন্য ঘোষনা দেয়ার প্রস্তাব ও দেয়া হয়। সেই থেকেই মে মাসের প্রথম দিনটি শ্রমিক দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
উপসংহার
পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, ১লা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হলো মূলত শ্রমিকদের দাবী আদায়ের একটি দিন। শ্রমিকরা তারা তাদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য প্রাণ দিয়েছেন। আর এই প্রাণের প্রতিদানেই শ্রমিকরা ন্যায্য অধিকার আদায় করতে সক্ষম হয়েছে।
ধন্যবাদ
সামরিন ইনফো।
সামরিন ইনফো এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url