ফলের রাজা আম এর বিভিন্ন জাতের নাম ও বৈশিষ্ট্য

বাংলাদেশে গ্রীষ্মকালীন ফল হিসাবে আম অতি জনপ্রিয় একটি ফল। প্রতিটি মানুষই আম খেতে অত্যন্ত পছন্দ করে এবং আম রসালো জাতীয় ফল হওয়াই সকল বয়সী মানুষই আম খেয়ে থাকে। আমকে ফলের রাজা বলা হয়। ফলের রাজা আম এর বিভিন্ন প্রকার জাত রয়েছে এবং এগুলো প্রত্যেকেই আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য বহন করে। 
ফলের রাজা আম এর  বিভিন্ন জাতের নাম ও বৈশিষ্ট্য
আসুন যেনে নেওয়া যাক ফলের রাজা আম এর বিভিন্ন জাতের নাম ও বৈশিষ্ট্য ।

ভূমিকা

আম সাধারণত গ্রীষ্মকালীন ফল। বাংলাদেশের প্রায় সকল জায়গায় আম জন্মায় এবং এটি একটি সহজলভ ̈ একটি ফল। কাঁচা আম টক এবং পাকা আম মিষ্টি হয়ে থাকে আমের পুষ্টিগুনও অনেক। সব ফলের থেকে শ্রেষ্ঠ ফল হওয়ায় আমকে ফলের রাজা বলা হয়ে থাকে। আম সাধারণত কাঁচা অবস্থায় সবুজ ও পাঁকা অবস্থায় হলুদ রঙের হয়ে থাকে। আম মিষ্টি ফল হওয়ায় এর রস দুধ দিয়ে মিশিয়ে ভাত দিয়ে খেতে অনেক মজা লাগে।

তাছাড়া আমের জুস অথবা কাঁচা আমের সালাদ খেতেও দারুণ লাগে। বর্তমানে আমের জন্য বিখ্যাত রাজশাহী অঞ্চলকে বলা হয়। আম সাধারণত জৈষ্ঠ মাসে পাঁকা শুরু করে।

ফলের রাজা আম এর  বিভিন্ন জাতের নাম ও বৈশিষ্ট্য

নিচে ফলের রাজা আম এর বিভিন্ন জাত এর নাম ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হল। 

গোপালভোগ আম

আমের মৌসুমে নানা জাতের আম পাওয়া যায়। তবে সর্বপ্রথম যে আমটির সুঘ্রাণ বাগানের চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে সেই আমটি হল গোপালভোগ আম। হিন্দু ধমার্লম্বীরা মনে করেন যে, গোপালভোগ আমের অর্থ হল গোপালের ভোগ, যা ইশ্বরের খাবার- প্রিয় ফলের সাথে তুলনা করে নাম রাখা হয়েছে।
গোপালভোগ আম

গোপালভোগ আমটি প্রায় সব জেলাতেই পাওয়া যায়। তবে বেশি ভাল ও উৎকৃষ্ট মানের গোপালভোগ আম জন্মে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নাটোরে। তবে বাংলাদেশ বাদেও ভারতের মালদহ মুর্শিবাদ উত্তর প্রদেশে গোপালভোগ আম চাষ করা হয়।

গোপালভোগ আমের বৈশিষ্ট্য

এই আমটি কাঁচা অবস্থ্যা দেখতে সবুজ এবং পাকা অবস্থ্যা হলুদ লালচে বর্ণের দেখায়। গোপালভোগ আমে প্রচুর পরিমানে ক্যারোটিন, ভিটামিন-সি ও খনিজ পদার্থ পাওয়া যায়। এই আম মানুষের পুষ্টিগত মানের অভাব পূরণে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

হিমসাগর আম

হিমসাগর আমের সর্বপ্রথম উৎপত্তি হয় ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিবাদ জেলায়। আমের সকল জাতের মধে ̈ হিমসাগর সবার উপরে রয়েছে। হিমসাগর আমটির চাহিদা বাংলাদেশের সব জায়গায়। তবে চাহিদার তুলনায় এর সরবরাহ যথেষ্ট নয়। রাজশাহীতে এই আমের চাষের পরিমান অনেক কম বললেই চলে।
হিমসাগর আম

ব্যাপক পরিমানে চাষ হয়ে থাকে চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলায়, মেহেরপুর জেলার সদর উপজেলায়, দেবহাটা, কলারোয়া ও তালা উপজেলায়।এছাড়াও বর্তমনে সাতক্ষীরাতেও এই আমের ব্যাপক চাষ হচ্ছে। ঢাকার বাজারে জুন মাসে হিমসাগর আমের চাহিদা প্রচুর পরিমানে থাকে।

হিমসাগর আমের বৈশিষ্ট্য

  • জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ হতে পাকতে শুরু করে এবং জুন মাস পুরোটাই বাজারে দেখা যায়।
  • ১২ বছর বয়স হলে একটি হিমসাগর আমের গাছ পূর্নাঙ্গভাবে ফল দিতে পারে।
  • একটি পূর্ণতাপ্রাপ্ত আমের সাধারণত বুকের দিকটা গোলাকার এবং সাইনাস থেকে একটু লম্বা আকৃতির হয়ে থাকে।
  • এই আম দেখতে হালকা সবুজ রঙের হয়ে থাকে।

খিরসাপাত আম

খিরসাপাত আম হলো আশু জাতের এক প্রকার আম। এই আমের উদ্ভব নিয়ে অনেক মতবিরোধ থাকলেও এটি রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এর মত জায়গায় বেশ জনপ্রিয় একটি আম।
খিরসাপাত আম

খিরসাপাত আমের বৈশিষ্ট্য

  • জুন মাসের প্রথমে এটি বাজারে আসতে শুরু করে জুলাই মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত থাকে।
  • খিরসাপাত আম সাধারণত মাঝারি সাইজের হয়ে থাকে এবং আকারে কিছুটা গোলাকার। ৩-৪ টাতে ১ কেজি হয়।
  • স্বাদ খুবই মিষ্টি এবং সুগন্ধযুক্ত।
  • এর খোসা হালকা পুরো হয় এবং আঁশ অনেক কম থাকে।

ল্যাংড়া আম

ল্যাংড়া আম এর স্বাদ সকল আমের একেবারেই ভিন্ন। ল্যাংড়া আমের মধ্যে বারানসী আম হল বিখ্যাত জাত। ভারতে অতি বিখ্যাতএকটি আম ল্যাংড়া আম। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সহ সকল উত্তর ভারতে চাষ হয়ে থাকে এই ল্যাংড়া আমের। মূলত ভারতের বেনারসে এই আমের জন্ম হয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্চ, রাজশাহী, নওগা, নাটোর এলাকায় বেশি জন্মে।
ল্যাংড়া আম

ল্যাংড়া আমের বৈশিষ্ট্য

  • কাঁচা আমের গন্ধ অসাধারণ এবং পাকা অবস্থায় অনেকটা সবুজ থেকে হালকা হলুদ রঙ ধারন করে।
  • ল্যাংড়া আম অত্যন্ত রসালো ও সুস্বাদু।
  • এই আমের বোঁটা চিকন হয় এবং আটি অনেক পাতলা হয়ে থাকে।

ল্যাংড়া আমের নাম 'ল্যাংড়া' কেন

ল্যাংড়া আমের নামের পিছনে অনেক কাল্পনিক ঘটনা রয়েছে। ভাষা অনুযায়ী ল্যাংড়া বলতে বুঝায়, যার পায়ে কোন প্রকার সমস্যা আছে এর কারনে তার স্বাভাবিক চলন ব্যতিক্রম দেখাই। তাই তাকে ল্যাংড়া বলা হয়। একটি গল্প প্রচলিত আছে যে, আঠারো শতকের দিকে বেনারসে এক কৃষক প্রথমবার এই জাতের আমের চাষ করেন। সেই কৃষক এর পায়ে ত্রুটি ছিল। তখন থেকেই এই আমের নামকরণ করা হয় ল্যাংড়া।

হাড়িভাঙ্গা আম

আঁশবিহীন সুস্বাদু আম হল হাড়িভাঙ্গা আম যা সমগ্র বাংলাদেশ জুড়ে জনপ্রিয় ও বিখ্যাত। জনপ্রিয় এই হাড়িভাঙ্গা আমের জন্ম বা উৎস হল রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াগাছের তেকানি গ্রামে। রংপুরের মাটি ও আবহাওয়া দুইটিই আম চাষের জন্য বেশ উপযোগী।

হাড়িভাঙ্গা আমের ইতিহাস

দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে জমিদার তাজ বাহাদুর সিংয়ের রাজদরবারে একটি আমের বাগানবাড়ি ছিল যা যমুনেশ্বরী নদীর তীর ঘেঁষা রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বালুয়া মাসুমপুর বাজারে অবস্থিত। তেকানি নামক গ্রামের এক আম ব্যবসায়ী, যার নাম নফল উদ্দীন পাইকার, সে আম ক্রয় করে স্থানীয় পদাগঞ্জ বাজারে আম বিক্রি করতো।
হাড়িভাঙ্গা আম
রাজদরবারে আমের বাগানবাড়ির একটি আম ছিল অনেক সুস্বাদু ও মিষ্টি জাতের। জমিদারের অনুমতি নিয়ে পাইকার নফল উদ্দীন ঐ আমবাগান থেকে সেই আমগাছটির একটি কলম নিয়ে এসে নিজ বাড়িতে রোপণ করে। নফল উদ্দীন যেই গ্রামে বাস করতেন সেই এলাকাটি বরেন্দধপ্রবণ অঞ্চল হওয়ার কারণে সব সময় পানি দিতে হতো।

নফল উদ্দীন জীবিকার তাগিদে সব সময় বিভিন্ন কাজে ব্যাস্ত থাকত। যার কারনে সব সময় গাছে পানি দিয়া তার জন্য অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে যেত। সেই জন্য রোপন করা আম গাছটির নিচে মাটির হাঁড়ি দিয়ে ফিল্টার এর মত বানিয়ে গাছে সারাদিন পানি দিত। এই ভাবে চলতে থাকার পর কে বা কারা যেন সেই মাটির হাঁড়িটি ভেঙ্গে ফেলে।

কিন্তু রপরও সেই গাছে প্রচুর পরিমানে আম ধরে। সেই আমগুলি বাজারে বিক্রি করার জন্য নিয়ে গেলে মানুষজন ঐ আম সম্পর্কে জানতে চায়। নফল উদ্দীন বলেন যে, গাছের নিচের হাঁড়িটি লোকজন ভেঙ্গে ফেলেছিল সেই গাছের আম এইগুলি। সেই থেকেই এই আমটি হাড়িভাঙ্গা আম নামে পরিচিত লাভ করে।

আম্রপালি আম

দেশে যত প্রকার আম রয়েছে তার ২৫ শতাংশ আম রূপালি জাতের রয়েছে। মাত্র ১০ বছর আগেও ফজলি, হিমসাগর,ল্যাংড়া, গোপালভোগ আম ছিল বাংলাদেশের মানুষের কাছে অতি পছন্দের জাতের আম। এখন সেই সব আমের বদলে জায়গা দখল করেছে আম্রপালি জাতের আম। বর্তমানে আম্রপালির জাতের চাষ দ্রুতগতিতে বেড়েই চলেছে।
আম্রপালি আম
দেশের ৬৪ জেলায় আম্রপালি আম চাষ হয়ে থাকে। তবে নওগাঁ, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান এই চারটি জেলায় সবথেকে বেশি চাষ হয়ে থাকে। মুনজের আলম নামক এক চাঁপাইনবাবগঞ্জের উদ্যোগতা বলেন, আম্রপালি একটি হাইব্রীদ জাত যা রোপন করার দুই বছর পরই ফল পাওয়া যায়। আম্রপালির আরেকটি নাম হল বারি-৩ আম।

আম্রপালি আমের বৈশিষ্ট্য

  • আম রূপালি গাছ অন্যান্য আমের গাছের তুলনায় অনেক কম জায়গা নেই অথার্ৎ কম জমিতে অনেক বেশি আম রূপালি গাছ লাগানো যায়।
  • ফল দেখতে লম্বাটে এবং ডিম্বাকৃতির।
  • ফলের শাঁসের পরিমাণ বেশি থাকে।
  • ফলের ওজন ২০০-৩০০ গ্রাম হয়ে থাকে।
  • এই আমটি প্রচুর মিষ্টি ও সুস্বাদু আম। সকল বয়সী মানুষই এই আমটি খেতে খুব ভালবাসে।

কাটিমন আম

বর্তমানে কাটিমন আম খুব জনপ্রিয় একটি আম। এর মূল কারণ হলো কাটিমন আম একটি বারোমাসী ফল। সারা বছর ধরে এই আম পাওয়া যায়। কাটিমন আম খুবই রসালো ও সুস্বাদু একটি ফল। সকল বয়সী মানুষই এই আমটি খেতে ভালবাসে। অসময়ে বাগানে আম থাকার কারনে কাটিমন আম বিক্রি করে চাষীরা ভাল লাভবান হচ্ছে।
কাটিমন আম

কাটিমন আমের বৈশিষ্ট্য

  • কাটিমন আম গাছে বছরে ২-৩ বার আম ধরে এবং আমের পরিমানও অনেক বেশি হয়।
  • এক একটি আমের ওজন ২০০ থেকে ৩০০ গ্রাম হয়ে থাকে।
  • আম পাকলে হলুদাভাব রং ধারণ করে।
  • এই আমের কোন প্রকার আঁশ থাকে না এবং সব মৌসুমেই এই আমের স্বাদ একই রকম থাকে।

মিয়াজাকি আম

বিশ্বে যত প্রকার আমের জাত রয়েছে তার মধে ̈ সবচেয়ে দামি আমের জাত হল “মিয়াজাকি”। যার প্রতি কেজি আমের দাম বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৩ লাখ ৬০ হাজার ৯০০ টাকা (প্রায়)। জাপানের মিয়াজাকি জায়গার নাম অনুসারে বিশ্বের সবচেয়ে দামি জাতের আম চাষ করেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কৃষকরা। বিশ্বে প্রথমবারের মতো এই দামি জাতের আমটি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় উৎপাদন করা হয়।
মিয়াজাকি আম
পরে ১৯৮০’র দশকে জাপানের মিয়াজাকিতে নিয়ে এসে এই আমের উৎপাদন প্রচুর পরিমানে বৃদ্ধি পায়। এই আমটিকে জাপানে “সূর্যের ডিম” এবং ভারতে “লাল সূয”র্ নামে পরিচিতি লাভ করে। এই আম গাছে যখন মুকুল আসে তখন মুকুলটি বেগুনী রঙ ধারণ করে। জাপানে মিয়াজিকের চারা খুবই যত্নসহকারে এবং সাবধানতার সহিত রোপণ করা হয়ে থাকে। মিয়াজাকি আম পরিপূর্ন হওয়ার পর এর রঙ উজ্জ্বল লাল ধারণ করে।

ফজলি আম

দক্ষিণ এশিয়ার পূর্বদিকে বিশেষ করে বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারে সব থেকে বেশি ফজলি আম পাওয়া যায়। রাজশাহী অঞ্চলের ফজলি আম সব থেকে বিখ্যাত এবং জনপ্রিয়।
ফজলি আম

ফজলি আমের বৈশিষ্ট্য

  • একটি ফজলি আমের গাছ সাধারণত লম্বায় ১৩.৮ সে.মি. ও চওড়ায় ৯.৫ সে.মি. হয়ে থাকে। এ
  • কটি ফজলি আমের গড় ওজন প্রায় ৬০০-৬৫০ গ্রাম হয়। তবে এর ওজন ১ কেজি বা তার বেশিও হতে পারে।
  • ফজলি আম দেখতে লম্বা, সামান্য চ্যাপ্টা হয়ে থাকে।
  • ফজলি আমের খোসা পাতলা ধরনের হয়ে থাকে।
  • ফজলি আম পাকলে গায়ের রঙ হালকা হলুদ হয়ে থাকে।
  • আম প্রচুর মিষ্টি, আশবিহীন, রসালো ও সুস্বাদু।

গৌড়মতি আম

গৌড়মতি আম এর জাতটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় প্রথম সন্ধান পাওয়া গেছে। কৃষিবিদরা দাবি করেন যে এটি নতুন জাতের একটি আম। আশ্বিনা ও ল্যাংড়া এই দুই জাতের আমের মুকুলের প্রাকৃতিক পরাগায়নের মাধ্যমে এই নতুন জাতটির উদ্ভব হয়। তারাই এই আমটির নাম দিয়েছে গৌড়মতি।
গৌড়মতি আম
সব গাছের আম যখন শেষ বা বাজারে তেমন আমের কোন দেখা নেই ঠিক তখনই এই আমের সময় শুরু হয়। দিনাজপুরের বীরগঞ্জের অধ্যাপক ওসমান গনি এই আমের জাত চাষ করে ভাল সাফল্য পেয়েছেন। এই আমের কলম চারা উৎপাদন করে কম মূল্যে কৃষকদের মাঝে বিক্রি করে এই আমের জাতটির ফলন বাড়াচ্ছে। সাধারণত ১৫ আগষ্ট থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত এই আমের জাতটি পাওয়া যায়।

আশ্বিনা আম

সকল প্রকার আমের মধ্যে আশ্বিনা আম সবথেকে নাবি জাত। আকারের দিক বিবেচনা করলে ফজলি ও আশ্বিনার আকার প্রায় একই।ফজলি আম পাকলে হালকা হলুদ বর্ণের হয় এবং আশ্বিনা আম পাকলে সবুজ বর্ণের হয়ে থাকে। চারিদিকে যখন আমের মিষ্টি গন্ধ শেষ হয়ে যায় তখন আশ্বিনা আম হাজির হয় তার নিজ রূপে। আশ্বিনা আম তুলনামূলক ভাবে কম মিষ্টি হয়ে থাকে। 
আশ্বিনা আম
আগে আশ্বিনা আম খেতে অনেক মানুষ অনিহা প্রকাশ করলেও বর্তমানে আশ্বিনা আমের চাহিদা ব্যাপক। এর খোসা মাঝারি মোটা, শাঁস সাধারনত হলুদ ও হলুদাভাভ হয়ে থাকে। আশ্বিনা আমের গাছ মাঝারি থেকে দীর্ঘ আকৃতির হয়ে থাকে। গাছে মুকুল আসার পর ৫ থেকে ৬ মাস সময় লাগে এই আমটি পাকতে । 

সাধারণত বর্ষাকালের দিকে আশ্বিনা আম পাকতে শুরু করে। আশ্বিনা আম কাঁচা অবস্থায় টক থাকার কারনে বাড়িতে এর টক আচার তৈরি করে থাকে। এই আমে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি পাওয়া যায়।

বারি ৪ আম

বারি ৪ আম এক প্রকার হাইব্রিড জাতীয় আম। এটি নিয়মিত ফলদানকারী উচ্চ ফলনশীল নাবী জাত। এই আম প্রচুর মিষ্টি ও সুস্বাদু হয়ে থাকে। এমনকি কাঁচা অবস্থাতেও খেতে অনেক মিষ্টি লাগে। পাকা আমে প্রচুর ক্যারোটিন ও খনিজ পদার্থ থাকে।
বারি ৪ আম
উর্বর দোআঁশ মাটিতে উঁচু কিংবা মাঝারি জমিতে বারি ৪ আম চাষের জন ̈ বেশ উপযোগী। বারি ৪ আমের গাছ বড় ও অনেক খাঁড়া হয়ে থাকে। আমের শাঁস গাঢ় হলদে বর্ণের, আঁশহীন এবং রসালো হয়ে থাকে।

উপসংহার

"ফলের রাজা আম এর বিভিন্ন জাতের নাম ও বৈশিষ্ট্য" সম্পর্কিত উপরোক্ত পোষ্টে কোন জিজ্ঞাসা থেকলে নিচের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করতে পারেন অথবা আমাদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন।


ধন্যবাদ
সামরিন ইনফো।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সামরিন ইনফো এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url