বঙ্গবন্ধু টানেল সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান

বাংলাদেশে নদীর তলদেশে অবস্থিত একটি সড়ক সুড়ঙ্গ যা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল বা বঙ্গবন্ধু টানেল বা বঙ্গবন্ধু সুড়ঙ্গ বা কর্ণফুলী টানেল নামে পরিচিত। এই টানেলটি নদীর দুই তীরের অঞ্চলকে সংযুক্ত করেছে।  "বঙ্গবন্ধু টানেল সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান" পোষ্টে আজকে আমরা বঙ্গবন্ধু টানেল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
বঙ্গবন্ধু টানেল সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান
চলুন যেনে নেওয়া যাক বঙ্গবন্ধু টানেল সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। 

ভূমিকা

বাংলাদেশের অবকাঠামো নেটওয়ার্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হিসেবে দাড়িয়ে আছে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল যা কর্ণফুলী টানেল নামেও পরিচিত। এটি প্রকৌশলের একটি উল্লেখযোগ্য কীর্তি। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চল এবং বন্দর শহর চট্রগ্রাম এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ স্থাপন করার জন্য কর্ণফুলী নদীর তলদেশে এই টানেলটিই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। 

শেখ মুজিবুর রহমানের সম্মানের জন্য নামকরণ করা হয়েছে , স্নেহের সাথে বঙ্গবন্ধু নামে পরিচিত, টানেলটি নদীর তলদেশের একটি পথের চেয়ে বেশি প্রতিনিধিত্ব করে। এটি মূলত অগ্রগতি, সংযোগ এবং জাতীয় গর্বের আদর্শ চেতনাকে মূর্ত করে। এই টানেলটি বাংলাদেশের প্রথম সুড়ঙ্গ পথ যা দক্ষিণ এশিয়ায় নদীর তলদেশের প্রথম ও দীর্ঘতম সড়ক সুড়ঙ্গপথ।

বঙ্গবন্ধু টানেল সম্পর্কে ১০ টি বাক্য

  • বাংলাদেশের একটি যুগান্তকারী অবকাঠামো প্রকল্প হলো বঙ্গবন্ধু টানেল যা কর্ণফুলী টানেল নামেও পরিচিত।
  • বঙ্গবন্ধু টানেল এর কাজ ২০১৩ সালে শুরু হয়েছিল এবং ২০২২ সালে কাজ সম্পন্ন হয়েছিল যেটি মূলত একটি উল্লেখযোগ্য প্রকৌশল অর্জনকে চিহ্নিত করে থাকে।
  • পাথুরে ভূখন্ড এবং পানির নিম্ন ভাগের অবস্থার চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবেলা করার জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল উন্নত টালেন বোরিং মেশিন এবং ড্রিলিং প্রযুক্তি।
  • বঙ্গবন্ধু টানেল যা কর্ণফুলীর নদীর তলদেশে প্রায় ৩.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ যা এটিকে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘতম ডুবো সুড়ঙ্গগুলির মধ্যে একটি করে তুলেছে।
  • বঙ্গবন্ধু টানেলটি বন্দর নগরী চট্রগ্রাম এবং বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ হিসেবে কাজ করে।
  • বঙ্গবন্ধু টানেলটির সমাপ্তি এই অঞ্চলে অবকাঠামোগত উদ্ভাবন ও উন্নয়নের কেন্দ্র হিসেবে বাংলাদেশকে শক্তিশালী অবস্থানে পৌছেছে।
  • বঙ্গবন্ধু টানেলটির মাধ্যমে চট্রগ্রাম ও দক্ষিণ-পূর্ব জেলাগুলির মধ্যে ভ্রমণের সময়সীমাকে অনেককাংশে কমিয়ে এনেছে, সংযোগ বৃদ্ধি করেছে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সহজতর থেকে আরো সহজতর করেছে।
  • বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামানুসারে টানেলটি জাতীয় গর্বের প্রতীক।
  • বঙ্গবন্ধুর টানেলটির মাধ্যমে এই অঞ্চলের ব্যবসা, বানিজ্য এবং শিল্প কার্যক্রম ব্যাপক উন্নতি হয়েছে এবং অর্থনৈতিক দিক থেকেও অনেক চাঙ্গা হয়েছে।
  • বঙ্গবন্ধু টানেলের উত্তরাধিকার তার ভৌত কাঠামোর বাইরেও অনেক প্রসারিত যেটি আগামী প্রজন্মেও জন্য অগ্রগতি, সংযোগ এবং জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হিসেবে কাজ করবে।

বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বহুল আলোচিত ও প্রত্যাশিত চট্রগ্রামের কর্ণফুলী নদীর নিম্নদেশে নির্মিত দেশের প্রথম যোগাযোগ সুড়ঙ্গ টানেলের ফলক উন্মোচন করেছেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিন পিং ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবরে বঙ্গবন্ধু টানেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। 

তবে বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মানের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি মাসে উদ্বোধন করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৮ অক্টোবর ২০২৩ সালে উদ্বোধন করেন। পরবর্তীতে ২০২৩ সালের সংশোধিত বাজেটে প্রকল্পের মেয়াদ ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়।

বঙ্গবন্ধু টানেলের টোল

বঙ্গবন্ধু টানেলের টোলের হার যানবাহনের শ্রেণি হিসেবে চূড়ান্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সেতু বিভাগ। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, তিন দশমিক ৪৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই টানেলে সর্বমোট ১২ ধরনের যানবাহনকে টোল প্রদান করতে হবে। ২০০ টাকা হলো সর্বনিম্ন টোলের পরিমান। প্রাইভেটকার এর জন্য এই সর্বনিম্ন টোল নির্ধারন করা হয়েছে। এমনকি পিকআপ পারাপারের জন্য টোল ২০০ টাকা। 

মাইক্রোবাসের জন্য ২৫০ টাকা, ৩১ আসনের কম বাসের টোল ৩০০ টাকা, ৩২ আসনের বেশি বাসের টোল ৪০০ টাকা, তিন এক্সেল বিশিষ্ট বড় বাসের টোল ৫০০ টাকা, পাঁচ টন পর্যন্ত পন্য পরিবহনে সক্ষম ট্রাকের টোল ৪০০ টাকা, আট টনের ট্রাক ৫০০ টাকা এবং ১১ টনের ট্রাক ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। 

এছাড়াও তিন এক্সেলের ট্রেইলারে টোল ৮০০ টাকা, চার এক্সেলের ট্রেইলারে টোল ১০০০ টাকা। পরবর্তী প্রতি এক্সেলের জন্য বাড়তি টোল দিতে হবে ২০০ টাকা।

অর্থায়ন

বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মান করার জন্য যে অর্থায়নের প্রয়োজন ছিল তা যোগাড় করা সহজ ছিলনা। এটি বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো প্রকল্প এবং এর মধ্যে সরকার বা অন্যান্য প্রাসঙ্গিক কর্তৃপক্ষের বিনিয়োগ জড়িত থাকবে। সুড়ঙ্গ নির্মানে ব্যয় ১০ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা। 

২০১৫ সালে চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিন পিং এর ঢাকা সফরে কর্ণফুলী টানেল নির্মাণে ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর করে। চুক্তি মোতাবেক চীনের এক্সিম ব্যাংক ২০ বছর মেয়াদি ঋণ হিসাবে ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা দিচ্ছে দুই শতাংশ হার সুদে এবং বাকি অর্থায়ন করছে বাংলাদেশ সরকার।

অর্থনৈতিক সম্ভাবনা

দেশের ব্যবসা বানিজ্যের সিংহভাগ আসে বানিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম থেকে। এই চট্টগ্রাম থেকেই পরিচালিত হয়ে থাকে প্রায় সকল প্রকার আমদানি-রপ্তানি, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক কর্মকান্ড। মূলত চট্টগ্রাম উন্নয়ন মানেই দেশের উন্নয়ন। এই বাস্তবতায় বর্তমানে সরকার চট্টগ্রামকে আরো উন্নত করার লক্ষ্যে বহু মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। 

এর মধ্যে একটি হলো চট্টগ্রাম কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু টানেল। যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বড় টানেল। এই টানেলটি পুরো দেশের অর্থনীতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত টানেলটির কারনে কর্ণফুলীর দুইপাড়ের এলাকার আশেপাশের শিল্পোন্নয়ন ও সহজ যোগাযোগব্যবস্থার দ্বারা মানুষের কর্মসংস্থান তৈরী হবে এবং রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে। 

যার ফলে দেশের বেকার এর সংখ্যা কমবে দারিদ্র হ্রাস পাবে এবং আর্থসামাজিক উন্নয়ন হবে। বঙ্গবন্ধু টানেল অর্থনীতির আকার ও জিডিপি বাড়াতে সাহায্য করবে। জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে শুণ্য দশমিক ১৬৬ শতাংশ অবদান রাখবে। শিল্প উদ্যোক্তরা নতুন নতুন কারখানা স্থাপনের জন্য বিনিয়োগে আগ্রাহী হচ্ছে। 

ফলে গড়ে উঠছে নতুন নতুন শিল্পাঞ্চল। ইতিমধ্যে টানেলকে ভিত্তি করে ইস্পাত, সিমেন্ট, পোশাক, ফার্মাসিউটিক্যালস, খাদ্য ইত্যাদি খাতের বেশকিছু শিল্প-কারখানা গড়ে উঠছে। তথ্য অনুযায়ী, কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ আনোয়ারায় গড়ে উঠেছে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল। এই টানেলটি তৈরীর ফলে এ অঞ্চলের লাখো মানুষের ভাগ্য যাবে। 

আনোয়ারায় গড়ে উঠেছে চায়না ইকোনমিক জোন তা প্রায় ৭৮৩ একর জমি নিয়ে। ১৬ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে ওই এলাকায় চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। এইখানে রপ্তানিমুখী জাহাজশিল্প, ইলেকট্রনিক্স পণ্য ও সিমেন্ট শিল্পসহ ৩১টি শিল্প কারখানা স্থাপিত হবে। মোট কথা বঙ্গবন্ধু টানেল তৈরীর মাধ্যম দিয়ে দেশের অর্থনৈতিক এর প্রভাব ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হবে।

প্রকল্পের উদ্দেশ্য

বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ। চট্টগ্রামকে দুই ভাগে বিভক্ত করছে এই কর্ণফুলী নদী। এর অংশে রয়েছে নগর ও বন্দর এবং অন্য অংশে রয়েছে ভারী শিল্প এলাকা। ইতিমধ্যে তিনটি সেতু নির্মান করা হয়েছে কর্ণফুলী নদীর উপর। যা সর্বপ্রকার যানবাহনের জন্য যথেষ্ট নয়। কর্ণফুলী নদীতে পলি জমা অনেক বড় একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে যা কর্ণফুলী বন্দরের জন্য বড় একটি হুমকি স্বরূপ। 

পলি জমা সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আর নদীর উপর কোন ধরনের সেতু নির্মাণ না করে এর তলদেশে টানেল তৈরী করা প্রয়োজন। চট্টগ্রাম জেলার দুই অংশকে যুক্ত করার জন্য কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

নির্মাণ

কর্ণফুলী নদীতে নির্মাণ করা হচ্ছে বঙ্গবন্ধু টানেল যেটি চায়না কমিউনিকেশনস কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড কাজটি করছে। টানেল বা সুড়ঙ্গের বিভিন্ন অংশ চীনের ঝেনজিয়াংয়ে তৈরী করে বাংলাদেশে আনা হচ্ছে। ২০২২ সালের মধ্যে সুড়ঙ্গটির তৈরীর কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও বিভিন্ন কারনে তা আগষ্ট ২০২৩ সাল পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। 

টানেলের প্রতি টিউবের প্রস্থ ৩৫ ফুট এবং উচ্চতা ১৬ ফুট এবং দুটি টিউবের মধ্যবর্তী পার্থক্য ১১ মিটার। তবে টানেলটির মূল দৈর্ঘ্য ৩.৪৩ কিলোমিটার এবং এর সাথে যুক্ত ৫.৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক।

বঙ্গবন্ধু টানেলের ফলে সুবিধা

  • টানেলের ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার এর মধ্যে নতুন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর হবে।
  • প্রকৃতিক দূর্যোগ যেমন ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে মানুষকে চলতে হবে না। নদীর তলদেশের মধ্যে দিয়ে অর্থাৎ এই টানেল এর মধ্যে দিয়ে মানুষ যাতাযাত করতে পারবে।
  • চট্টগ্রামে বা কর্ণফুলী নদীর উপরের দুই সেতুতে চাপ কমাতেও সাহায্য করবে বঙ্গবন্ধু টানেল।
  • এই টানেল এর মাধ্যমে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার এর মধ্যে নতুন সড়ক যোগাযোগের কাজে আসবে।
  • শুধুমাত্র ঢাকা-চট্টগ্রাম নয় পুরো বাংলাদেশের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থায় মূল্যবান ভূমিকা রাখবে এই টানেল।

বঙ্গবন্ধু টানেল এর পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব

টানেল নির্মাণ প্রকল্প পরিচালক মোঃ হারুনুর রশীদ চৌধুরী বলেছেন যে, টানেলের ভিতরে কি আছে বা কি হচ্ছে তা কৌতূহলবশত কারো জানা বা দেখার জন্য হেটে, সাইকেলে কিংবা মোটর সাইকেল নিয়ে ভিতরে প্রবেশ সম্পূর্ণভাবে নিষেধ। এছাড়াও কোন যানবাহন ভেতরে কোন প্রকার ওভারটেক করতে পারবে না কারণ মনিটরিং রুম থেকে সবসময় যাবতীয় কিছু পর্যবেক্ষণ করা হবে।

মন্তব্য 

পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে বঙ্গবন্ধু টানেলটি মূলত কর্ণফুলী নদীর দুই প্রান্তকে এক সাথে মিলিত করেছে। এর মাধ্যমে অর্থনৈতিক ভাবে উন্নতি লাভ করেছে। ব্যবসা বানিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে, শিল্পায়ন বৃদ্ধি পেয়েছে। উপরোক্ত "বঙ্গবন্ধু টানেল সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান" আলোচানাটির মাধ্যমে একজন পাঠক বঙ্গবন্ধু টানেল সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবে।

ধন্যবাদ
সামরিন ইনফো। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সামরিন ইনফো এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url