সৌদি থেকে বাংলাদেশে বিকাশে টাকা পাঠানোর নিয়ম
অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি তাদের কষ্টার্জিত অর্থ পরিবার-পরিজনের কাছে দ্রুত ও নিরাপদে পাঠানোর জন্য বিকাশ ব্যবহার করে থাকেন। সৌদি আরব থেকে বিকাশে টাকা পাঠানো একটি সহজ ও জনপ্রিয় মাধ্যম। এই পোস্টে আমরা সৌদি থেকে বিকাশে টাকা পাঠানোর নিয়ম, মাধ্যম এবং প্রয়োজনীয় ধাপগুলো নিয়ে আলোচনা করব।
চলুন যেনে নেওয়া যাক "সৌদি থেকে বাংলাদেশ বিকাশে টাকা পাঠানোর নিয়ম" সম্পর্কে বিস্তারিত।
ভূমিকা
প্রবাসে থাকা অনেক বাংলাদেশি প্রতিনিয়ত কষ্টার্জিত অর্থ দেশে পরিবারের কাছে পাঠিয়ে থাকেন। সৌদি আরবে বসবাসরত বাংলাদেশিদের জন্য পরিবারের কাছে টাকা পাঠানোর সবচেয়ে সহজ এবং নিরাপদ উপায়গুলোর মধ্যে একটি হলো বিকাশ। বিকাশের মাধ্যমে সরাসরি মোবাইল ওয়ালেটে টাকা পৌঁছে যাওয়ায় এটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
তবে অনেকেই ঠিকভাবে জানেন না কীভাবে সৌদি থেকে বিকাশে টাকা পাঠানো যায়। এই প্রবন্ধে আমরা আলোচনা করব সৌদি আরব থেকে কীভাবে সহজে এবং দ্রুত বিকাশে টাকা পাঠানো যায়, পাশাপাশি কোন কোন মাধ্যম ব্যবহার করা যায়।
সৌদি থেকে বাংলাদেশে বিকাশে টাকা পাঠানোর নিয়ম
সৌদি আরবে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাদের পরিশ্রমের উপার্জন বিকাশের মাধ্যমে পরিবার-পরিজনের কাছে পাঠানোর জন্য বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে থাকেন। যেমন-
১. মোবাইল রেমিট্যান্স অ্যাপের মাধ্যমে
সৌদি আরবের কিছু ব্যাংক এবং রেমিট্যান্স কোম্পানি তাদের নিজস্ব মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে বিকাশে টাকা পাঠানোর সুবিধা দেয়। যেমন:- আল রাজি ব্যাংক এবং এর মোবাইল অ্যাপ
- এনসিবি কুইক পে (NCB QuickPay)
- এসএএবি রেমিট (SABB Remit)
- প্রথমেই Al Rajhi ব্যাংক এর apps ওপেন করে লগইন করে নিতে হবে।
- এরপর Transfer এ ক্লিক করতে হবে।
- এরপর আপনাকে Beneficiary যোগ করতে হবে। এরজন্য আপনাকে Add New Beneficiary তে ক্লিক করতে হবে।
- এরপর International Beneficiary তে ক্লিক করতে হবে।
- এরপর Country তে Bangladesh, Currency তে BDT- Bangladeshi Taka, Select Delivery Option এ Wallet, Service Provider এ MONEYGRAM C2C Provider এবং Operators এ Bkash সিলেক্ট করে Next বাটনে ক্লিক করতে হবে।
- এরপর Beneficiary First Name (যে বিকাশ নাম্বারে টাকা পাঠাবেন, অর্থাৎ যে নামে বিকাশ খোলা আছে তার First Name), Beneficiary Family Name (যে বিকাশ নাম্বারে টাকা পাঠাবেন, অর্থাৎ যে নামে বিকাশ খোলা আছে তার Family Name), Beneficiary Nationality (Bangladeshi), Beneficiary Mobile Number (বিকাশ নাম্বার হলেও হবে না হলেও অন্য নাম্বার দিলেও হবে) এবং Wallet Number (অবশ্যই যে বিকাশ নাম্বারে পাঠাচ্ছেন সেই নাম্বার দিতে হবে) দিয়ে Next বাটনে ক্লিক করতে হবে।
- এরপর Beneficiary Summary আসবে। এখানে আপনি দেখে নিবেন আপনার দেওয়া সব তথ্য সঠিক আছে কিনা। কোন ভূল থাকলে Edit বাটনে ক্লিক করে ঠিক করে নিতে পারবেন। এরপর Confirm বাটনে ক্লিক করতে হবে।
- এরপর আপনার মোবাইলে একটি OTP Code আসবে। এই কোডটি বসিয়ে Confirm করতে হবে।
- এরপর Call Me Now বাটনে ক্লিক করতে হবে।
- এরপর আপনাকে Activation এর জন্য যে নাম্বার চাপতে বলবে সেটি চাপতে হবে। তাহলে Beneficiary Active হয়ে যাবে।
- এরপর Back করে চলে আসতে হবে। এরপর International Beneficiary তে ক্লিক করতে হবে।
- এরপর আপনার Beneficiary লিস্ট থেকে যে Beneficiary কে বিকাশ এ টাকা পাঠাতে চান সেটি সিলেক্ট করে নিতে হবে। একটি Beneficiary কে যদি ১৩ মাসের অধিক সময় ধরে টাকা পাঠানো না হয়, তবে সেটি অটোমেটিক ভাবে Deactivated হয়ে যায়।
- এরপর টাকার পরিমাণ এবং Expense Purpose দিয়ে Next বাটনে ক্লিক করতে হবে।
- এরপর Confirm বাটনে ক্লিক করতে হবে।
- আপনার টাকা পাঠানো হয়ে যাবে। তবে অনেক ক্ষেত্রে Beneficiary Active হয়না। ফলে Confirm করার পরেও ইরোর দেখায়। তখন ব্যাংক এ ফোন করে Active করে নিতে হবে। Al Rajhi ব্যাংক এর ফোন নাম্বার- ৯২০০০৩৩৪৪।
২. ব্যাংক, এক্সচেইঞ্জ হাউজ বা এমটিও এজেন্টের মাধ্যমে টাকা পাঠানো
- প্রথমে বিকাশ অনুমোদিত এবং পার্টনার ব্যাংক ব্রাঞ্চ, মানি এক্সচেইঞ্জ বা এমটিও এজেন্ট এর কাছে যান।
- আপনি যার কাছে টাকা পাঠাবেন তার বিকাশ একাউন্ট নাম্বার এবং তিনি বিকাশ একাউন্ট খোলার সময় যে নাম ব্যবহার করেছিলেন তার পুরো নাম দিতে হবে।
- যে পরিমাণ টাকা পাঠাবেন তা জমা দিন এবং এজেন্ট কে কাজটি সম্পন্ন করতে অনুরোধ করুণ।
- সৌদি আরব সহ পৃথিবীর যেকোন দেশ থেকে ব্যাংক, এক্সচেইঞ্জ হাউজ বা এমটিও এজেন্টের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর সময় যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে তা হল-
- যার কাছে টাকা পাঠাবেন তার বৈধ রেজিস্ট্রেশন করা বিকাশ একাউন্ট আছে কিনা।
- যার কাছে আপনি বিকাশে টাকা পাঠাবেন তার বিকাশ নাম্বার এবং পুরো নাম সঠিকভাবে দিয়েছেন কিনা।
- যে পরিমাণ টাকা আপনি পাঠাবেন তা বাংলাদেশি টাকায় লেনদেন এর সীমা অতিক্রম করছে কিনা।
- আপনি যদি বৈধ উপায়ে বাংলাদেশে প্রিয়জনের বিকাশ একাউন্টে টাকা পাঠান, তাহলে আপনার প্রিয়জন পাঠানো টাকার উপর ২.৫% সরকারি প্রণোদনা পাবেন।
৩. অনলাইন রেমিট্যান্স সার্ভিসের মাধ্যমে বিকাশে টাকা পাঠানোর নিয়ম
সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর সহজ এবং আধুনিক পদ্ধতির মধ্যে অনলাইন রেমিট্যান্স সার্ভিসগুলো অন্যতম। এই সার্ভিসগুলোর মাধ্যমে আপনি সরাসরি প্রাপকের বিকাশ নম্বরে টাকা পাঠাতে পারেন।
এই পদ্ধতি বেশ দ্রুত এবং নিরাপদ, যেখানে শুধুমাত্র একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করলেই লেনদেন সম্পন্ন করা যায়। নিচে জনপ্রিয় কিছু অনলাইন রেমিট্যান্স সেবার নাম ও সেগুলোর মাধ্যমে বিকাশে টাকা পাঠানোর বিস্তারিত ধাপ দেওয়া হলো।
৩.১. রিয়া মানি ট্রান্সফার (Ria Money Transfer)
রিয়া মানি ট্রান্সফার একটি আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার সার্ভিস, যা বিশ্বব্যাপী ব্যবহৃত হয়। বিকাশের সাথে রিয়ার অংশীদারিত্ব থাকায় সরাসরি প্রাপকের বিকাশ অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো যায়।
রিয়া মানি ট্রান্সফার ব্যবহার করার নিয়ম-
- প্রথমে Ria Money Transfer ওয়েবসাইট বা অ্যাপ ডাউনলোড করে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন।
- নিবন্ধনের সময় প্রেরকের নাম, ঠিকানা, এবং পরিচয়পত্রের তথ্য প্রদান করুন।
- Send Money অপশন থেকে Country হিসেবে বাংলাদেশ নির্বাচন করুন।
- Delivery Method থেকে Mobile Wallet বা bKash সিলেক্ট করুন।
- প্রাপকের বিকাশ নম্বর এবং নাম সঠিকভাবে প্রদান করুন।
- পরিমাণ নির্ধারণ করে Confirm বাটনে ক্লিক করুন।
- আপনার কার্ড বা ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অর্থ প্রদান সম্পন্ন করুন।
- প্রাপকের বিকাশ নম্বরে টাকা জমা হলে এসএমএসের মাধ্যমে নোটিফিকেশন চলে যাবে।
৩.২. মোবাইল মানি (Mobile Money)
মোবাইল মানি সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশে ব্যবহৃত একটি জনপ্রিয় মানি ট্রান্সফার সেবা। এটি অনলাইন এবং মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে বিকাশে টাকা পাঠানোর সুযোগ দেয়।
মোবাইল মানি ব্যবহার করার নিয়ম-
- প্রথমে মোবাইল মানির অফিসিয়াল অ্যাপ ডাউনলোড করে অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন।
- Sign Up অপশন থেকে ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে নিবন্ধন সম্পন্ন করুন।
- Send Money অপশনে ক্লিক করে প্রাপকের দেশ হিসেবে বাংলাদেশ নির্বাচন করুন।
- Mobile Wallet বা bKash সিলেক্ট করুন।
- প্রাপকের বিকাশ নম্বর এবং টাকার পরিমাণ প্রদান করুন।
- লেনদেন নিশ্চিত করতে পাসওয়ার্ড বা OTP দিয়ে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করুন।
- লেনদেন সফল হলে প্রাপকের বিকাশ নম্বরে টাকা জমা হবে এবং সাথে সাথে এসএমএস চলে যাবে।
৩.৩. মুনিজ (Munajj)
মুনিজ একটি আধুনিক অনলাইন রেমিট্যান্স সার্ভিস, যা মধ্যপ্রাচ্যের প্রবাসীদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। এর মাধ্যমে সরাসরি বিকাশ অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো যায়।
মুনিজ ব্যবহার করার নিয়ম-
- প্রথমে মুনিজের ওয়েবসাইট বা অ্যাপ ডাউনলোড করে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন।
- Sign Up ফর্ম পূরণ করে প্রেরকের ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান করুন।
- Send Money অপশন থেকে প্রাপকের দেশ হিসেবে বাংলাদেশ নির্বাচন করুন।
- bKash সিলেক্ট করুন এবং প্রাপকের বিকাশ নম্বর প্রদান করুন।
- টাকার পরিমাণ উল্লেখ করে প্রেরকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট সম্পন্ন করুন।
- লেনদেন সফল হলে প্রাপকের বিকাশ অ্যাকাউন্টে টাকা জমা হবে এবং SMS-এর মাধ্যমে নিশ্চিতকরণ নোটিফিকেশন পাঠানো হবে।
সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর সুবিধা ও অসুবিধা
বিশ্বব্যাপী প্রবাসীরা তাদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা পাঠানোর জন্য বিভিন্ন উপায় খোঁজেন। বাংলাদেশি প্রবাসীদের জন্য সৌদি আরব থেকে দেশে টাকা পাঠানোর অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম হলো মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস বিকাশ।
বিকাশের মাধ্যমে খুব সহজেই এবং দ্রুত টাকা প্রেরণ করা যায়, যা প্রাপকের মোবাইল একাউন্টে সরাসরি পৌঁছায়। এটি রেমিট্যান্স প্রেরণের একটি সহজ এবং সাশ্রয়ী মাধ্যম হিসেবে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। তবে যেকোনো সুবিধাজনক মাধ্যমের মতোই বিকাশে টাকা পাঠানোর কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে।
এখানে সৌদি থেকে বিকাশে টাকা পাঠানোর সুবিধা এবং অসুবিধা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
সুবিধা
- সহজ প্রক্রিয়া: সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর প্রক্রিয়া বেশ সহজ এবং দ্রুত। বিকাশ অ্যাপ বা এজেন্টের মাধ্যমে টাকা পাঠানো সম্ভব হয়।
- সরাসরি মোবাইল একাউন্টে পৌঁছায়: প্রাপক টাকা সরাসরি বিকাশ একাউন্টে পেয়ে যান, যা থেকে তিনি স্থানীয় দোকানে অথবা এটিএম থেকে তোলার সুযোগ পান।
- নিরাপত্তা: বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠানো নিরাপদ এবং প্রতিটি লেনদেন এনক্রিপ্টেড থাকে, ফলে জালিয়াতির ঝুঁকি কম থাকে।
- নিম্ন ফি: বিকাশ রেমিট্যান্সের উপর কম সার্ভিস চার্জ নেয় যা অন্যান্য ট্রান্সফার সার্ভিসের তুলনায় সাশ্রয়ী।
- প্রাপ্যতা: বিকাশের সেবা বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলে পাওয়া যায়, যা গ্রামীণ এলাকাগুলোকেও অন্তর্ভুক্ত করে।
অসুবিধা
- সীমিত পরিমাণ টাকা পাঠানো: বিকাশের মাধ্যমে একবারে নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি টাকা পাঠানো যায় না, যা বড় অংকের রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে।
- ফি পরিবর্তনশীল: যদিও বিকাশের সার্ভিস চার্জ কম, কখনও কখনও ফি সময়ভেদে পরিবর্তিত হতে পারে।
- প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা: যারা প্রযুক্তি ব্যবহারে অভ্যস্ত নয়, তাদের জন্য অ্যাপ্লিকেশন বা অনলাইন লেনদেন ব্যবহার করা একটু কঠিন হতে পারে।
- নির্দিষ্ট এজেন্টের উপর নির্ভরতা: সৌদি আরবের সব এলাকায় বিকাশের এজেন্ট সহজে পাওয়া না যাওয়ার কারণে কিছু ক্ষেত্রে এজেন্টের উপর নির্ভরতা তৈরি হয়।
- একাউন্ট সংক্রান্ত জটিলতা: যদি প্রাপকের বিকাশ একাউন্টে কোনো সমস্যা থাকে, তাহলে টাকা উত্তোলনের সমস্যা হতে পারে।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQs)
সৌদি আরব থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর সময় পাঠক ও ব্যবহারকারীদের মাঝে অনেক সাধারণ প্রশ্ন ওঠে। এখানে সেইসব প্রশ্ন এবং তাদের উত্তর দেওয়া হলো:
১. সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে কত সময় লাগে?
বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর প্রক্রিয়া সাধারণত তাৎক্ষণিক হয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে, বিশেষ করে যদি সার্ভারের লোড বেশি থাকে বা টেকনিক্যাল কোনো সমস্যার সম্মুখীন হয়, তাহলে ১-২ ঘণ্টা বা সর্বোচ্চ ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
২. টাকা জমা হচ্ছে না, কেন?
যদি টাকা প্রাপকের বিকাশ একাউন্টে জমা না হয়, তাহলে তার কয়েকটি কারণ হতে পারে:
- প্রাপকের বিকাশ একাউন্ট সক্রিয় না থাকলে।
- সঠিক বিকাশ নম্বর বা তথ্য না দেওয়া হলে।
- সার্ভারের টেকনিক্যাল সমস্যা বা সার্ভিস ডাউন হলে।
- লেনদেনের নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করলে।
- এ ক্ষেত্রে বিকাশের কাস্টমার কেয়ারের সাথে যোগাযোগ করলে সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।
৩. সৌদি আরব থেকে টাকা পাঠানোর জন্য কী কী ডকুমেন্ট প্রয়োজন?
- প্রেরকের বৈধ পরিচয়পত্র, যেমন পাসপোর্ট বা আইডি কার্ড।
- বিকাশের জন্য প্রেরকের বৈধ বিকাশ একাউন্ট থাকা প্রয়োজন।
- প্রাপকের সঠিক বিকাশ নম্বর এবং নাম প্রয়োজন।
- ৪. প্রাপককে টাকা তুলতে কী কী ডকুমেন্ট দেখাতে হবে?
- প্রাপকের বিকাশ একাউন্ট সক্রিয় থাকলে তাকে কোনো অতিরিক্ত ডকুমেন্ট দেখাতে হয় না। তিনি সরাসরি তার মোবাইল অ্যাপ অথবা নিকটস্থ এজেন্ট থেকে টাকা তুলতে পারেন। যদি তার অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছায়, সে এটিএম বা এজেন্টের মাধ্যমে টাকা তুলতে পারে।
৫. কত টাকা একবারে পাঠানো যায়?
বিকাশের মাধ্যমে একবারে সর্বোচ্চ ২৫,০০০ টাকা পাঠানো সম্ভব। তবে দৈনিক বা মাসিক লেনদেনের সীমা নির্দিষ্ট থাকে এবং প্রেরক ও প্রাপকের একাউন্টের লেনদেনের ধরন অনুযায়ী তা ভিন্ন হতে পারে।
৬. ফি কত দিতে হবে?
বিকাশ রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে ফি সাধারণত সাশ্রয়ী থাকে। সৌদি আরব থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর ফি প্রেরিত অর্থের পরিমাণ এবং সার্ভিস প্রোভাইডারের উপর নির্ভর করে। ফি সংক্রান্ত সঠিক তথ্যের জন্য বিকাশের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা এজেন্টের সাথে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
৭. বিকাশে রেমিট্যান্স লেনদেনের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা কতটুকু?
বিকাশের লেনদেনগুলো এনক্রিপ্টেড এবং প্রেরক ও প্রাপকের তথ্য সুরক্ষিত থাকে। প্রতিটি লেনদেনের জন্য ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) ব্যবহার করা হয়, যা লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
৮. টাকা পাঠানোর পর প্রাপক কীভাবে জানবেন যে টাকা এসেছে?
প্রাপকের মোবাইলে একটি এসএমএস পাঠানো হয়, যেখানে পাঠানো অর্থের বিবরণ এবং প্রেরকের তথ্য থাকে। এছাড়া, প্রাপক বিকাশ অ্যাপে লেনদেনের তথ্য চেক করতে পারেন।
৯. টাকা পাঠানোর পর কোনো ভুল হলে কী করা উচিত?
যদি ভুলক্রমে ভুল বিকাশ নম্বরে টাকা পাঠানো হয়, তবে তাৎক্ষণিকভাবে বিকাশ কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করতে হবে। বিকাশের পক্ষ থেকে ভুল লেনদেনের সমাধান দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া রয়েছে, যা অনুসরণ করা হয়।
এই FAQ-গুলো পাঠকদের সাধারণ প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে সহায়ক হবে এবং সৌদি থেকে বাংলাদেশে বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর প্রক্রিয়া সম্পর্কে আরও পরিষ্কার ধারণা দেবে।
উপসংহার
সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে বিকাশে টাকা পাঠানো এখন অনেক সহজ হয়ে গেছে, যা প্রবাসীদের জন্য একটি বড় সুবিধা। বিভিন্ন অনলাইন রেমিট্যান্স সার্ভিস, ব্যাংকিং অ্যাপ, এবং এক্সচেঞ্জ হাউজের মাধ্যমে সরাসরি বিকাশে টাকা পাঠানো যায়।
এই প্রক্রিয়াগুলো দ্রুত, নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী হওয়ায় এটি প্রবাসীদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। তবে টাকা পাঠানোর আগে অবশ্যই প্রাপকের সঠিক বিকাশ নম্বর ও তথ্য যাচাই করে নিন। সঠিক নিয়ম মেনে টাকা পাঠালে প্রিয়জনদের কাছে অর্থ পৌঁছানো সহজ এবং ঝামেলামুক্ত হবে।
"সৌদি থেকে বাংলাদেশে বিকাশে টাকা পাঠানোর নিয়ম" পোস্ট সম্পর্কিত মন্তব্যের জন্য নিচের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করতে পারেন।
ধন্যবাদ
সামরিন ইনফো।
সামরিন ইনফো এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url